অ্যাজিলউইস এর কাজ, খাওয়ার নিয়ম, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, সতর্কতা - MedicineBangla

অ্যাজিলউইস

অ্যাজিলউইস একটি অ্যাজালাইড যা ম্যাক্রোলাইড এন্টিবায়োটিকের একটি উপশ্রেণি। অ্যাজিলউইস কিছু নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের চিকিৎসায় ও প্রতিকারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মধ্য কর্ণের সংক্রমণ, স্ট্রেপ থ্রোট, নিউমেনিয়া, টাইফয়েড, ব্রংকাইটিস ও সাইনাসের প্রদাহ রোধে ব্যবহার করা হয়। অ্যাজিলউইস ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন সংশ্লেষণকে বাধা দেয়ার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করে। এটি (অ্যাজিলউইস) ব্যাকটেরিয়ার রাইবোজোমের ৫০ং সাবইউনিটের সাথে যুক্ত হয়ে ব্যাকটেরিয়ার সজঘঅ এর ট্রান্সলেশন বন্ধ করে।

ব্যবহার

অ্যাজিলউইস সংবেদনশীল জীবাণুঘটিত নিম্নলিখিত সংক্রমণে নির্দেশিত হয়ে থাকে-

  1. শ্বাসতন্ত্রের নিম্নাংশের সংক্রমণ, যেমন- ব্রংকাইটিস এবং নিউমোনিয়া।
  2. শ্বাসতন্ত্রের উর্ধ্বাংশের সংক্রমণ, যেমন- সাইনুসাইটিস , ফেরিনজাইটিস/টনসিলাইটিস, ওটাইটিস মিডিয়া।
  3. ত্বক ও অন্যান্য নরম কলাসমূহের সংক্রমণ।
  4. পুরুষ ও মহিলার নিম্নলিখিত যৌনরোগের চিকিৎসায় অ্যাজিলউইস ব্যবহৃত হয়ে থাকে; নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস, ক্লামাইডিয়া ট্র্যাকোম্যাটিস ঘটিত সারভিসাইটিস।

অ্যাজিলউইস এর দাম কত? অ্যাজিলউইস এর দাম

অ্যাজিলউইস in Bangla
Azilewis in bangla
বাণিজ্যিক নাম অ্যাজিলউইস
জেনেরিক এজিথ্রোমাইসিন
ধরণ ট্যাবলেট
পরিমাপ
দাম
চিকিৎসাগত শ্রেণি Macrolides
উৎপাদনকারী Medilewis Biotech
উপলভ্য দেশ India
সর্বশেষ সম্পাদনা January 7, 2025 at 1:49 am

খাওয়ার নিয়ম / ব্যবহারের নিয়ম

অ্যাজিলউইস খাওয়ার নিয়ম / ব্যবহারের নিয়ম

অ্যাজিলউইসক্যাপসুল এবং সাসপেনশন খাবার গ্রহণেরন অন্তত এক ঘন্টা পূর্বে অথবা দুই ঘন্টা পরে গ্রহণ করতে হবে। তবে অ্যাজিলউইস ৫০০ ট্যাবলেট খাবার গ্রহণের পূর্বে অথবা পরে কিংবা খাবারের সাথে গ্রহণ করা যেতে পারে। অ্যাজিলউইস সাসপেনশন তৈরীর জন্য ১০ মি.লি বা ২ চা চামচ পরিমাণ সদ্য ফুটানো ঠান্ডা পানি সবটুকু শুষ্ক পাউডারের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।

  1. বয়স্ক মাত্রা: শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের জন্য সর্বমোট ১.৫ গ্রাম অ্যাজিলউইস তিন দিনে সেবন করতে হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন ৫০০ মি.গ্রা. অ্যাজিলউইস পর পর তিন দিন খেতে হয়। বিকল্প মাত্রা হিসেবে প্রথম দিন ৫০০ মি.গ্রা. এবং পরবর্তী ৪ দিন প্রতিদিন ৩৫০ মি.গ্রা. করেও অ্যাজিলউইস সেবন করা যেতে পারে।
  2. ক্ল্যামাইডিয়া ট্র্যাকোম্যাটিস ঘটিত যৌনরোগের ক্ষেত্রে অ্যাজিলউইস এর ১ গ্রাম একক মাত্রায় গ্রহণ করতে হয়। বিকল্প মাত্রা হিসেবে প্রথম দিন ৫০০ মি.গ্রা. এবং পরবর্তী দুইদিন ২৫০ মি.গ্রা. করে অ্যাজিলউইস গ্রহণ করা যেতে পারে। বয়োবৃদ্ধ রোগীদের জন্য অ্যাজিলউইস বয়স্ক মাত্রার সব পরিমাণ নির্দেশিত।
  3. শিশুদের জন্য মাত্রা : ৬ মাস বা তার বেশি বয়সের শিশুদের জন্য অ্যাজিলউইস প্রতিদিনে ১০ মি.গ্রা. প্রতিকেজি শরীর ওজন হিসেবে এবং পরবর্তী চারদিন ৫ মি.গ্রা. প্রতি কেজি শরীর ওজন হিসেবেও অ্যাজিলউইস দেয়া যেতে পারে।

শরীরের ওজন ও বয়স অনুপাতে অ্যাজিলউইস নিম্নলিখিত মাত্রায় দেয়া যেতে পারে-শরীর ওজন (বয়স) মাত্রা সেবনকাল

  1. ১৫-২৫ কেজি (৩-৭ বছর) ২০০ মি.গ্রা প্রতিদিন পরপর তিন দিন
  2. ২৬-৩৫ কেজি (৮-১১ বছর) ৩০০ মি.গ্রা. প্রতিদন পরপর তিনদিন
  3. ৩৬-৪৫ কেজি (১২-১৪ বছর) ৪০০ মি.গ্রা. প্রতিদিন পরপর তিন দিন
  4. ৪৫ কেজি এর বেশি শরীর ওজনের ক্ষেত্রে বয়স্ক মাত্রা প্রযোজ্য।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অ্যাজিলউইস এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মাত্রা ও পরিধি কম এবং এটি রোগী কর্তৃক বেশ ভালোভাবেই সহনীয়। পাশর্^ প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, বমি, আন্ত্রিক ব্যথা, অস্বস্তি, বায়ু উদগিরণ, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, ঘুম ঘুম ভাব এবং ত্বক লাল হয়ে ওঠা। এসব পাশর্^ প্রতিক্রিয়া ওষুধ গ্রহণ বন্ধ করলে বন্ধ হয়ে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে যকৃতে কিছু এনজাইমের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে এটি সহজেই পরিবর্তনযোগ্য। কোন কোন ক্ষেত্রে রক্তে নিউট্রোফিলের সংখ্যা ক্ষণস্থায়ীভাবে সামান্য কমে যেতে পারে।

সতর্কতা

যে সমস্ত রোগীর বৃক্কের জটিলতা আছে তাদের ক্ষেত্রে অ্যাজিলউইস সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। যে সমস্ত রোগীল অ্যাজিলউইস বা অন্য কোন ম্যাক্রোলাইড এন্টিবায়োটিকের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অ্যাজিলউইস এর ব্যবহার পরিহার করা উচিত।

মিথস্ক্রিয়া

অ্যান্টাসিড: পাকস্থলীতে অ্যালুমিনিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম ধারণকারী অ্যান্টাসিড দ্বারা সিরামের সর্বোচ্চ মাত্রা কিন্তু শোষণের মোট মাত্রা হ্রাস পায় না। তাই এই অ্যান্টাসিডগুলি খাওয়ার অন্তত 1 ঘন্টা আগে বা 2 ঘন্টা পরে Azithromycin নেওয়া উচিত।

এর্গট ডেরিভেটিভস: এরগোটিজমের তাত্ত্বিক সম্ভাবনার কারণে, এরগট ডেরিভেটিভস এবং অ্যাজিথ্রোমাইসিনের একযোগে ব্যবহার এড়ানো উচিত। Digoxin & সাইক্লোস্পোরিন: ম্যাক্রোলাইডগুলি ডিগক্সিনের প্লাজমা ঘনত্ব বাড়াতে পরিচিত এবং সাইক্লোস্পোরিন এবং তাই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত যখন সহ-প্রশাসন প্রয়োজন।

অ্যান্টি-হিস্টামাইনস: এরিথ্রোমাইসিন এবং টেরফেনাডিন বা অ্যাস্টেমিজোলের মধ্যে একটি সম্ভাব্য প্রাণঘাতী মিথস্ক্রিয়া রিপোর্ট করা হয়েছে। যদিও অ্যাজিলউইসের সাথে এই ধরনের মিথস্ক্রিয়া এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তবে অ্যাজিলউইস এবং টেরফেনাডিন বা অ্যাস্টেমিজোলের সহযোগে ব্যবহার এড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ।

গর্ভাবস্থাকালীন ব্যবহার

সাম্প্রতিক গবেষণা ফলাফল অনুযায়ী অ্যাজিলউইস ক্লামাইডিয়া জনিত সংক্রমণের জন্য গর্ভকালীন সময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অন্যান্য সংক্রমণে অ্যাজিলউইস এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে পুরোপুনি নিশ্চিত হওয়ার পরেই কেবলমাত্র অ্যাজিলউইস গর্ভকালীন সময়ে ব্যবহার করা উচিত। অ্যাজিলউইস মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয় কিনা তা জানা যায়নি। সেজন্য স্তন্যদানকারী মায়ের ক্ষেত্রে অ্যাজিলউইস ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

বৈপরীত্য

অ্যাজিথ্রোমাইসিন রোগীদের মধ্যে অ্যাজিথ্রোমাইসিন বা অন্য কোনও ম্যাক্রোলাইড অ্যান্টিবায়োটিকের সংবেদনশীল সংবেদনশীল নয় icated এরগোট ডেরিভেটিভস এবং অ্যাজিথ্রোমাইসিনের সহ-প্রশাসন contraindicated হয়। হেপাটিক রোগের রোগীদের মধ্যে অ্যাজিথ্রোমাইসিন contraindated হয়।

অতিরিক্ত সতর্কতা

শিশুরোগ ব্যবহার: Azithromycin ওরাল ডোজ ফর্ম 6 মাস বয়স থেকে শিশু রোগীদের দেওয়া যেতে পারে। 16 বছরের কম বয়সী শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের ইনজেকশনের জন্য অ্যাজিথ্রোমাইসিনের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

তীব্র ওভারডোজ

অ্যাজিথ্রোমাইসিনের সাথে ওভারডেজের কোনও তথ্য নেই। ম্যাক্রোলাইড অ্যান্টিবায়োটিকগুলির সাথে ওভারডেজের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে শ্রবণশক্তি হ্রাস, মারাত্মক বমিভাব, বমি এবং ডায়রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। গ্যাস্ট্রিক ল্যাভেজ এবং সাধারণ সহায়ক পদক্ষেপগুলি নির্দেশিত হয়।

অন্যান্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া

  1. এন্টাসিড : এ্যালুমিনিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ এন্টাসিড অ্যাজিলউইসের সরিাম মাত্রা কমিয়ে দেয়, তবে শোষণের পরিমাণ কমায় না। সেজন্য অ্যাজিলউইস এন্টাসিড গ্রহণের কমপক্ষে ১ ঘন্টা পূর্বে অথবা ২ ঘন্টা পরে সেববন করা উচিত।
  2. আরগট জাতীয় ওষুধ : একই সঙ্গে অ্যাজিলউইস ও আরগট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করলে আরগটিজম দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ডিগক্সিন ও সাইক্লোস্পোরিনের প্লাজমা মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। সেজন্য এ সকল ওষুধ এক্ষেত্রে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

সংরক্ষণ

অ্যাজিথ্রোমাইসিন IV ইনফিউশন: নির্দেশাবলী অনুসারে মিশ্রিত করা হলে, ইনজেকশনের জন্য অ্যাজিথ্রোমাইসিন 24 ঘন্টা বা ঘরের তাপমাত্রা 30 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে বা 5 ডিগ্রি সেলসিয়াস রেফ্রিজারেশনে সংরক্ষণ করা হলে 7 দিনের জন্য স্থিতিশীল থাকে।

অ্যাজিথ্রোমাইসিন ক্যাপসুল, ট্যাবলেট এবং সাসপেনশনের জন্য শুকনো পাউডার: ঘরের তাপমাত্রায় (৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে) সংরক্ষণ করা উচিত। পুনর্গঠিত অ্যাজিথ্রোমাইসিন সাসপেনশনের যেকোন অব্যবহৃত অংশ 5 দিন পরে বাতিল করা উচিত।

অ্যাজিথ্রোমাইসিন আই ড্রপস: খোলা না করা বোতল 2°C থেকে 8°C তাপমাত্রায় রেফ্রিজারেশনের নিচে সংরক্ষণ করুন। বোতল খোলা হয়ে গেলে, 2°C থেকে 25°C তাপমাত্রায় 14 দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করুন। 14 দিন পরে বাতিল করুন।

*** Taking medicines without doctor's advice can cause long-term problems.
Share