প্রাপ্তবয়স্ক: ত্বকের ক্ষতস্থানে এই ক্রিম অল্প পরিমাণে দিনে ২ বার প্রয়োগ করা উচিত, বিশেষ করে সকালে ১ বার এবং সন্ধ্যায় ১ বার। ব্যানডেজ দিয়ে আবৃত করে অথবা শরীরের ত্বকের বড় অংশ জুড়ে এই ক্রিম ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রদাহ জনিত লক্ষণ সমূহ হ্রাস না পাওয়া পর্যন্ত এই ক্রিম দ্বারা চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া উচিত, তবে তা ২ সপ্তাহের বেশি সময় জুড়ে নয়। এই ক্রিম দ্বারা ২ সপ্তাহ চিকিৎসা করার পর প্রয়োজন হলে শুধুমাত্র ইকোনাজোল বা ইকোনাজোল নাইট্রেট যুক্ত ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা করতে হবে।বাচ্চাদের ক্ষেত্রে: শরীরের ওজনের তুলনায় ত্বকের পৃষ্ঠভাগ বড় হওয়ার কারণে ত্বকে কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার জনিত এইচপিএ এক্সিস সাপ্রেশন এবং কুশিংস সিন্ড্রোম পরিলক্ষিত হয় (অতিরিক্ত কর্টিকোস্টেরয়েড হরমোন উৎপাদনের সংবেদনশীলতা) যা বয়ষ্কদের তুলনায় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশী দেখা যায়। তাই এসব ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
বিরলক্ষেত্রে, সাময়িক স্থানিক জ্বালাতন, চুলকানি এবং লালতা দেখা দিতে পারে ব্যবহারের সাথে সাথেই। ইকোনাজলের এলার্জিক প্রভাব খুবই কম এবং খুবই সহনীয়, এমনকি কোমল ত্বকের জন্যও। দীর্ঘদিন করটিকোস্টেরয়েড ব্যবহার অ্যাড্রেনালিন দমিয়ে রাখার ঝুঁকি থাকে, বিশেষত নবজাতক এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অথবা যখন ওক্লুসিভ ড্রেসিং প্রয়োগ করা হয়। নবজাতকদের ন্যাপকিন ওক্লুসিভ ড্রেসিং হিসেবে কাজ করে।
সতর্কতা
শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য। এই ক্রিম চোখে ব্যবহার কিংবা মুখে সেবনের জন্য নয়।
যদি কোন প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায় যে, অতিসংবেদনশীলতা বা রাসায়নিক প্রদাহ হবে তাহলে ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
ত্বকে কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করলে তা পর্যাপ্ত শোষিত হয়ে পুরো শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন এড্রিনাল সাপ্রেশন। রক্তে শোষনের পরিমাণ বিভিন্ন কারণে বেড়ে যেতে পারে, যেমন ত্বকের অধিক জায়গা জুড়ে ব্যবহার করলে,ক্ষতযুক্ত ত্বকে ব্যান্ডেজ দিয়ে আবৃত করে ব্যবহার করলে এবং দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করলে।
ত্বকে ব্যবহৃত কর্টিকোস্টেরয়েড ত্বক পাতলা এবং ক্ষয় হওয়া, ত্বকে রেখা তৈরি হওয়া, কৈশিকনালির প্রসারণ এবং ত্বকে রক্তবর্ণের দাগ তৈরির সাথে সম্পর্কিত।
ত্বকে ব্যবহৃত কর্টিকোস্টেরয়েড অতিমাত্রায় সংক্রমণ বা সুযোগ সন্ধানী জীবানুর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
শিশু: শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায়, শিশুর ত্বকের প্রকৃতি এবং শরীরের ওজনের তুলনায় বৃহত্তর ত্বকের পৃষ্ঠের কারণে শিশুটির ত্বকের মাধ্যমে কর্টিকোস্টেরয়েডের বর্ধিত শোষণ হতে পারে। এই ক্রিম শিশুদের সল্প সময়ের জন্য (২ সপ্তাহের কম) এবং ত্বকের ছোট অংশে (শরীর পৃষ্ঠের ১০% এর কম) ব্যবহার করা উচিৎ।কর্টিকোস্টেরয়েডের সিস্টেমিক এবং ট্রপিক্যাল ব্যবহারে দর্শনে ব্যাঘাতের সৃষ্টি হতে পারে। যদি রোগীর অস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি বা দৃষ্টির ব্যাঘাতের অন্যান্য উপসর্গগুলি দেখা যায়, তাহলে সম্ভাব্য কারণ যার মধ্যে ক্যাটার্যাক্ট, গ্লুকোমা অথবা সেন্ট্রাল সেরাস কোরিওরেটিনোপ্যাথির মত দুরারোগ্য ব্যাধি থাকতে পারে তা নিরীক্ষণের জন্য অপথালমোলজিস্টের কাছে রেফার করা যেতে পারে। এই ক্রিম আবৃত অবস্থায় (ব্যান্ডেজ, ইত্যাদি) ব্যবহার করা যাবে না। ত্বকের পরিবর্তন এড়ানোর জন্য এই ক্রিম সতর্কতার সাথে মুখে ব্যবহার করতে হবে।
মিথস্ক্রিয়া
ইকোনাজল: যেসব যৌগিক পদার্থের বিপাক CYP3A4/2C9 ধারা হয়, মুখে এটিকোয়াগুলান্ট (ওয়ারফারিন এবং এসিনোকোমারল)। ট্রাইএ্যমসিনোলন: প্লাজমা স্যালিসাইলেট পরিমাণ কমিয়ে দেয়। জিআই ব্লিডিং এবং এনএসএআইডিস এর সাথে আলসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এন্টিডায়াবেটিক ওষুধের প্রভাব কমিয়ে দেয়। এমফোটেরিসিন বি, বিটা-ব্লকার, পপটাশিয়াম-ডিপ্লিটিং ডাইইউরেটিক্স, থিয়োফাইলিন এর সাথে হাইপারকেলেমিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ট্রাইএ্যমসিনোলন এর অপসাৱণ বেড়ে যায় যদি সিক্লোসপোরিন, কারবামাযেপিন, ফেনিঠায়িন, বারবিটিউরেটস এবং রিফাম্পিসিন এর সাথে ব্যবহার করলে।
গর্ভাবস্থাকালীন ব্যবহার
গর্ভাবস্থায়: ইকোনাজল নয় কিন্তু ট্রাইএমসিনোলন এসিটোনাইড প্লাসেন্টা অতিক্রম করে এবং বাহ্যিক করটিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার গর্ভবতী ক্ষেত্রে ভ্রুণের ক্ষতি করে । মানুষের ক্ষেত্রে এই প্রভাব পরিলক্ষিত নয় । তবুও গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘকালীন বাহ্যিক স্টেরয়েড ব্যবহার না করা ভাল । স্তন্যদানকালীন: খুবই সামান্য পরিমাণ ইকোনাজল এবং কিছু পরিমাণ ট্রাইএমসিনোলন মায়ের দুধ দিয়ে নির্গত হতে পারে । তাই, এই ওষুধ স্তন্যদানকালীন সময় দেয়া যাবেনা যদি দেয় তাহলে শিশুকে দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে ।
বৈপরীত্য
এই ক্রিম নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়-
যে ব্যাক্তি এর কোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল।
অন্য যেকোন ত্বকে ব্যবহার্য্য কর্টিকোস্টেরয়েড এর মতো এই ক্রিমও কোন কোন নির্দিষ্ট ত্বকীয় অবস্থার জন্য নির্দেশিত নয়, যেমন টিউবারকুলাস, ভেরিসেলা, হার্পিস সিমপ্লেক্স বা অন্য ভাইরাস জনিত সংক্রমণ বা সদ্য টিকা দেওয়া স্থান।
ডেকিউবিটাস আলসার: ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকজনিত চামড়ায় সংক্রমণ (উদাহরন- ত্বকের টিউবারকুলোসিস, ত্বকের সিফিলিস, হার্পিস সিমপ্লেক্স, হার্পিস জোষ্টার, চিকেন পক্স)।
রোজাসেয়া বা রোজাসেয়ার মত ডার্মাটাইটিস।
অতিরিক্ত সতর্কতা
তীব্র ওভারডোজ
এই ক্রিম শুধুমাত্র বাহ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য। ত্বকে কর্টিকোস্টেরয়েড, ট্রায়ামসিনোলোন ব্যবহার করলে তা পর্যাপ্ত পরিমান শোষিত হয়ে পুরো শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে। দূর্ঘটনাবশত কেউ গিলে ফেললে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। কেউ ভুল করে চোখে দিয়ে ফেললে পরিষ্কার পানি দিয়ে বা স্যালাইন দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি কোন উপসর্গ থেকে যায় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অন্যান্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া
সংরক্ষণ
আলো থেকে দূরে, ঠান্ডা (৩০°সে. এর নিচে) ও শুকনো স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
*** Taking medicines without doctor's advice can cause long-term problems.